বিশ্ব অর্থনীতির ধারাবাহিক পরিবর্তন, প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং ভ্রমণপিপাসু মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি—এই সবকিছুর সম্মিলিত প্রভাবে হোটেল খাতটি দ্রুত উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের পর্যটন এলাকা যেমন কুয়াকাটা, কক্সবাজার, বান্দরবান, সেন্ট মার্টিন-এ হোটেল বিনিয়োগ এখন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে।
২০২৬ সাল থেকে হোটেল সেক্টরে বিনিয়োগ করার জন্য এটি হবে এক ‘গোল্ডেন টাইম’। নিচে ব্যাখ্যা করছি কেন:
১. পর্যটন খাতে অভাবনীয় প্রবৃদ্ধি
২০২৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে পর্যটক প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বিশেষতঃ কুয়াকাটা, যেখানে এখন আধুনিক সড়ক যোগাযোগ এবং উন্নত অবকাঠামো গড়ে উঠছে—এইসব এলাকায় হোটেল ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠবে।
- আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় পর্যটকদের আগমনে ঘরতি চাহিদা তৈরি হবে
- পর্যটন করিডোর প্রকল্প হোটেল শিল্পকে আরও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করে তুলবে
২. প্যাসিভ ইনকামের নিরাপদ মাধ্যম
হোটেল শেয়ার, কন্ডো বা রুম মালিকানা মডেলে বিনিয়োগ করে মাসিক বা বার্ষিক প্যাসিভ ইনকাম অর্জন করা সম্ভব।
- নির্দিষ্ট রুম বা ইউনিট থেকে আয়
- শেয়ার হোল্ডারদের জন্য প্রফিট শেয়ার
- কোনো ঝামেলা ছাড়াই নিয়মিত রিটার্ন
বিশেষ করে যারা চাকরি বা ব্যবসার পাশাপাশি নিরাপদ আয়ের উৎস খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ বিনিয়োগ।
৩. সম্পদের মূল্য বৃদ্ধি ও পুনঃবিক্রয় মূল্য
হোটেল বা রিসোর্ট প্রকল্পে বিনিয়োগ করা মানেই শুধু আয় নয়, এটি একটি সম্পদের মালিকানা। ভবিষ্যতে চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আপনি চাইলে আপনার ইউনিট বা শেয়ার বিক্রি করেও বড় লাভ করতে পারেন।
- রিয়েল এস্টেটের মতো করে রিটার্ন
- পরবর্তীতে উচ্চ মূল্যে পুনঃবিক্রয়ের সুযোগ
৪. প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক হোটেল মডেল
২০২৬ সালের পর থেকে হোটেলগুলো হবে প্রযুক্তিনির্ভর। স্মার্ট রুম, AI-ভিত্তিক বুকিং সিস্টেম, অনলাইন চেক-ইন/আউট ইত্যাদির ফলে পরিচালনার খরচ কমে আসবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি বাড়বে। এতে লাভের পরিমাণ আরও বেশি হবে।
৫. নিরাপদ ও স্থিতিশীল খাত
হোটেল ব্যবসা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। রিয়েল এস্টেট বা শেয়ার মার্কেটের মত হঠাৎ করে বড় ক্ষতির ঝুঁকি কম। পর্যটন বাড়লে আয় বাড়ে, কমলেও সম্পদ রয়ে যায়।
৬. দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে ব্যবহারের সুবিধা
যদি আপনি এমন কোনো হোটেল বা রিসোর্ট ইউনিটে বিনিয়োগ করেন যেখানে মালিকানা ভিত্তিক মডেল চালু থাকে, তবে আপনি সিজন অনুযায়ী নিজেই সপরিবারে ভ্রমণের সময় ঐ ইউনিট ব্যবহার করতে পারবেন।
- ছুটিতে নিজের রুমে থাকা
- ভাড়ার পাশাপাশি পার্সোনাল ইউজ
- একটি লাইফস্টাইল ইনভেস্টমেন্ট
৭. সরকারের পর্যটন সহায়ক নীতি ও উন্নয়ন পরিকল্পনা
বাংলাদেশ সরকার পর্যটন শিল্পকে উন্নয়নশীল অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করছে। নতুন নতুন বিমানবন্দর, এক্সপ্রেসওয়ে, সমুদ্র সৈকত উন্নয়ন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে পর্যটন অঞ্চলগুলোকে উন্নত করা হচ্ছে।
২০২৬ সাল হোটেল ইনভেস্টমেন্টের জন্য পারফেক্ট টাইম
বর্তমান প্রেক্ষাপটে যারা ভবিষ্যতের জন্য একটি নিরাপদ ও লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট খুঁজছেন, তাদের জন্য হোটেল ইনভেস্টমেন্ট হবে পরবর্তী দশকের সেরা সিদ্ধান্তগুলোর একটি।
আপনি চাইলে এখন থেকেই দেশের বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পট-ভিত্তিক হোটেল প্রজেক্টে শেয়ার বা রুম কিনে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন।
মনে রাখুন:
“ভবিষ্যতের স্মার্ট ইনভেস্টররা শুধু টাকা জমায় না, টাকা এমন জায়গায় রাখে যেখানে তা নিজের মতো করে কাজ করে।”